গুরুত্বপূর্ণ
- প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস মনে করেন, দেশ ‘ভারতীয় আধিপত্যবাদের’ কারণে বড় সংকটে রয়েছে।
- রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচনের সম্ভাব্য সময়সীমা জানিয়েছেন: কম সংস্কারে ডিসেম্বরে, বেশি সংস্কারে আগামী জুনে।
- নির্বাচন জুনের পরে যাবে না—এ বিষয়ে তিনি প্রয়োজনে পদত্যাগপত্র লিখে দেওয়ারও প্রস্তাব দেন।
- দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐক্যের অভাবে প্রধান উপদেষ্টা চিন্তিত ও হতাশ, তবে জাতীয় ইস্যুতে ঐক্যের আশ্বাসে তিনি আশ্বস্ত।
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না জানিয়েছেন, প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস মনে করেন দেশ ‘ভারতীয় আধিপত্যবাদের’ কারণে এক গভীর সংকটের মুখোমুখি। এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় তিনি সমগ্র জাতির ঐক্যবদ্ধ থাকার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন।
রবিবার বিকেলে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে মাহমুদুর রহমান মান্নাসহ আরও কয়েকটি রাজনৈতিক দলের নেতাদের এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে রাতে বেরিয়ে মান্না সাংবাদিকদের কাছে প্রধান উপদেষ্টার উদ্বেগের কথা তুলে ধরেন। মান্নার ভাষ্যমতে, প্রধান উপদেষ্টা আলোচনা শুরুই করেন এই বলে যে, “আমরা অনেক বড় সংকটের মধ্যে আছি।” এই সংকটের মূল কারণ হিসেবে তিনি ‘ভারতীয় আধিপত্যবাদের ষড়যন্ত্রকে’ চিহ্নিত করেন। প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, এই আধিপত্যবাদী শক্তি দেশের বর্তমান পরিবর্তনকে মেনে নিতে পারছে না এবং সম্ভব হলে “এক দিনে ধ্বংস করে দিতে চায়,” আর সেই লক্ষ্যে তারা সম্ভাব্য সবকিছু করছে।
বৈঠকে রাজনৈতিক নেতারা প্রধান উপদেষ্টাকে রাজনীতিতে আরও সক্রিয়ভাবে সম্পৃক্ত হওয়ার অনুরোধ জানান। একইসঙ্গে, নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট তারিখ, রূপরেখা এবং নির্বাচন অনুষ্ঠানের পদ্ধতি সম্পর্কে তাঁর অবস্থান স্পষ্ট করার জন্যও তাঁকে অনুরোধ করা হয়। জবাবে প্রধান উপদেষ্টা দ্ব্যর্থহীনভাবে জানান, সংস্কারের পরিধি কম হলে চলতি বছরের ডিসেম্বরে এবং ব্যাপক সংস্কারের প্রয়োজন হলে আগামী বছরের জুনের মধ্যে নির্বাচন সম্পন্ন হবে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, কোনো অবস্থাতেই নির্বাচন জুনের পরে যাবে না, প্রয়োজনে তিনি এ বিষয়ে পদত্যাগপত্রে লিখে দিতেও প্রস্তুত।
দেশের জনগণ এবং রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐক্যের ক্রমবর্ধমান দুর্বলতায় প্রধান উপদেষ্টা গভীরভাবে চিন্তিত ও হতাশ বলেও মাহমুদুর রহমান মান্না উল্লেখ করেন। তবে, জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে দলগুলো ঐক্যবদ্ধ থাকবে—এই আশ্বাসে প্রধান উপদেষ্টা কিছুটা হলেও স্বস্তি পেয়েছেন বলে জানান মান্না।
মান্না আরও প্রকাশ করেন যে, সম্প্রতি উপদেষ্টা পরিষদের একটি বৈঠকে সৃষ্ট হতাশাজনক পরিস্থিতি থেকে প্রধান উপদেষ্টা পদত্যাগের মতো চরম সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছিলেন। তিনি বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করেন, কীভাবে অন্যান্য উপদেষ্টারা সম্মিলিতভাবে তাঁকে সেই পদক্ষেপ থেকে বিরত রেখেছেন, এমনকি পদত্যাগপত্র লিখতেও দেননি বা লেখা হলেও তা জমা দিতে দেননি।