নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধিতে সাধারণ মানুষের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। চাল, ডাল, তেল থেকে শুরু করে শাকসবজি, মাছ-মাংস সবকিছুর দাম আকাশছোঁয়া। এই অস্বাভাবিক মূল্যস্ফীতি নিম্ন ও মধ্যবিত্ত আয়ের মানুষদের ওপর চরম চাপ সৃষ্টি করেছে। আয়ের সাথে ব্যয়ের সঙ্গতি রাখতে না পেরে বহু পরিবারকে মৌলিক চাহিদা মেটাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। বিশেষ করে দিনমজুর ও স্বল্প আয়ের মানুষেরা দিশেহারা।
এই মূল্যবৃদ্ধির পেছনে একাধিক কারণ বিদ্যমান বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। আন্তর্জাতিক বাজারে কাঁচামালের মূল্যবৃদ্ধি, পরিবহন খরচ বৃদ্ধি, অসাধু ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট এবং বাজার মনিটরিংয়ের অভাবকে প্রধানত দায়ী করা হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে দাম বাড়ানো হচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠছে। সাধারণ মানুষের প্রতিক্রিয়া ক্ষোভ ও হতাশায় পরিপূর্ণ। তারা মনে করছেন, বাজারের ওপর সরকারের কার্যকর নিয়ন্ত্রণ নেই, যার সুযোগ নিচ্ছে মুনাফালোভী চক্র।
এই পরিস্থিতিতে, সরকারের দ্রুত হস্তক্ষেপ অত্যন্ত জরুরি। বাজার নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ, অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া এবং প্রয়োজনে ভর্তুকি দিয়ে হলেও নিত্যপণ্যের দাম সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে নিয়ে আসা উচিত। টিসিবির মাধ্যমে খোলা বাজারে পণ্য বিক্রি বৃদ্ধি করা এবং সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি আরও জোরদার করা প্রয়োজন।
জনগণের মৌলিক চাহিদা পূরণ রাষ্ট্রের দায়িত্ব। এই সংকটময় মুহূর্তে সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে তাদের জীবনযাত্রাকে সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসার জন্য কর্তৃপক্ষের দ্রুত ও সমন্বিত পদক্ষেপ কাম্য। অন্যথায়, জনমনে অসন্তোষ আরও বাড়বে, যা সামগ্রিক সামাজিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকিস্বরূপ। এই সমস্যা সমাধানে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা এবং তার সঠিক বাস্তবায়ন অপরিহার্য।