ভিয়েতনাম সরকারের বুধবার প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের মে মাসে দেশটির রপ্তানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৪% বৃদ্ধি পেয়েছে। সরকার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, এই মাসে দেশটির বাণিজ্য উদ্বৃত্তের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪.৬৭ বিলিয়ন ডলার।
এই উল্লেখযোগ্য রপ্তানি বৃদ্ধির পেছনে একটি বড় কারণ হলো ট্রাম্প প্রশাসনের প্রস্তাবিত “পারস্পরিক” শুল্ক হার, যা জুলাই মাস থেকে কার্যকর হওয়ার কথা। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এই দেশটির বিভিন্ন ফার্ম এই নতুন শুল্ক কার্যকর হওয়ার আগেই তাদের পণ্যের চালান বাড়ানোর চেষ্টা করছে। এই পদক্ষেপের মাধ্যমে তারা সম্ভাব্য বাণিজ্য প্রতিবন্ধকতা এড়িয়ে তাদের পণ্যের বাজার ধরে রাখতে চাইছে।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, জানুয়ারি থেকে মে মাসের মধ্যে গড় ভোক্তা মূল্য সূচক (সিপিআই) গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৩.২১% বৃদ্ধি পেয়েছে। এই সময়ে শিল্প উৎপাদন ৮.৮% এবং খুচরা বিক্রয় ৯.৭% বৃদ্ধি পেয়েছে, যা দেশটির অভ্যন্তরীণ অর্থনীতির শক্তিশালী অবস্থার ইঙ্গিত দেয়।
বিদেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রেও ভিয়েতনাম ইতিবাচক প্রবণতা দেখিয়েছে। জানুয়ারি থেকে মে মাসের মধ্যে প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগের (এফডিআই) প্রবাহ ৭.৯% বৃদ্ধি পেয়ে ৮.৯ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। একই সময়ে, বিদেশি বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি ৫১.১% বৃদ্ধি পেয়ে ১৮.৪ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। এই পরিসংখ্যান ভিয়েতনামের প্রতি বিদেশি বিনিয়োগকারীদের ক্রমবর্ধমান আস্থার প্রতিফলন ঘটায়।
ভিয়েতনামের এই অর্থনৈতিক সাফল্য দেশটির সরকারের গৃহীত বিভিন্ন নীতি এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের অনুকূল পরিবেশের ফল। বিশেষ করে, বিভিন্ন মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি এবং সরকারের ব্যবসাবান্ধব পদক্ষেপ বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ করতে এবং রপ্তানি বাড়াতে সহায়ক হয়েছে। তবে, ট্রাম্প প্রশাসনের নতুন শুল্ক নীতি ভিয়েতনামের রপ্তানি বাণিজ্যের ওপর কী ধরনের প্রভাব ফেলবে, তা ভবিষ্যতেই দেখা যাবে। আপাতত, ব্যবসায়ীরা ঝুঁকি কমাতে এবং সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে তৎপর। এই অর্থনৈতিক সূচকগুলি ভিয়েতনামের স্থিতিশীল প্রবৃদ্ধি এবং বিশ্ব অর্থনীতিতে দেশটির ক্রমবর্ধমান গুরুত্বকেই তুলে ধরে।