সোমবার ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী ফ্রাঁসোয়া বায়রুর সরকারের পতন ঘটেছে, যার ফলে দেশটিতে রাজনৈতিক অস্থিরতা আরও বেড়েছে। একটি অবিশ্বাস প্রস্তাবের মাধ্যমে ৩৬৪ ভোটের বিরুদ্ধে এবং ১৯৪ ভোটের পক্ষে বায়রুকে পদচ্যুত করা হয়, যার ফলে দেশটি গভীর রাজনৈতিক সংকটে পড়ে।
সরকারের পতনের প্রধান কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, বর্ধমান জাতীয় ঋণের মোকাবেলায় তাদের কৃচ্ছ্রসাধনমূলক ব্যবস্থাগুলির জন্য সংসদের সমর্থন অর্জন করতে ব্যর্থতা। বর্তমানে ফ্রান্সের জাতীয় ঋণ দেশটির জিডিপির ১১৪%। ঘাটতি ইইউ-এর ৩% সীমার প্রায় দ্বিগুণ।
দুই বছরেরও কম সময়ের মধ্যে পঞ্চম প্রধানমন্ত্রী নিযুক্ত করার দায়িত্ব এখন রাষ্ট্রপতি ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর উপর। আগামী সরকারের সবচেয়ে জরুরি কাজ হবে বাজেট পাস করা, যা বায়রুর জন্যও অসম্ভব হয়ে উঠেছিল। সংসদের মধ্যে গভীর বিভাজনের কারণে কোনও বাজেট প্রস্তাবের জন্য প্রয়োজনীয় সংসদীয় সমর্থন অর্জন করা অত্যন্ত কঠিন হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
মেরিন লে পেনের দূর-দক্ষিণপন্থী ন্যাশনাল র্যালি এবং জঁ-লুক মেলেনশনের দূর-বামপন্থী ফ্রান্স আনবোতে সহ বিরোধী দলগুলি অকাল নির্বাচনের দাবি জানাচ্ছে, যদিও ম্যাক্রোঁ এখনও পর্যন্ত সেই প্রস্তাবে রাজি হয়নি।
বায়রুর প্রস্তাবিত পরের বছরের বাজেটের জন্য ৪৪ বিলিয়ন ইউরো (৫১.৫১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার) সাশ্রয় পরিকল্পনাটি যথেষ্ট সমর্থন পায়নি। বিরোধী নেতারা এই পরিকল্পনার সমালোচনা করেছেন এবং বিকল্প সমাধানের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেছেন।
চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা ফ্রান্সের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নে এর প্রভাব নিয়ে উদ্বেগ বাড়াচ্ছে, বিশেষ করে ইউক্রেনে চলমান যুদ্ধ এবং বর্ধিত মার্কিন বাণিজ্য ও নিরাপত্তা উদ্বেগের মধ্যে।
নতুন প্রধানমন্ত্রী খোঁজার প্রক্রিয়া ম্যাক্রোঁর জন্য উল্লেখযোগ্য চ্যালেঞ্জ উপস্থাপন করে। সম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্যে তার নিজের কেন্দ্রীয় দল বা রক্ষণশীলদের কাছ থেকে, একটি মধ্যপন্থী সমাজতন্ত্রী বা এমনকি একজন প্রযুক্তিবিদও থাকতে পারেন। যাইহোক, এই কোনো বিকল্পই সংসদীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিশ্চিত করে না, যার ফলে ধারণা করা হচ্ছে যে অকাল নির্বাচনই শেষ পর্যন্ত একমাত্র সমাধান হতে পারে।
আর্থিক বাজারগুলি ভোটের প্রতি মৃদু প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে, ফলাফলের পূর্বাভাস করে। তবে আসন্ন ক্রেডিট রেটিং পর্যালোচনা ফ্রান্সের আর্থিক স্থিতিশীলতার জন্য একটি উল্লেখযোগ্য হুমকি। উল্লেখযোগ্য প্রতিবাদ এবং ধর্মঘটের পরিকল্পনার ফলে অস্থিরতা আরও বেড়েছে।