গুরুত্বপূর্ণ
- সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮ সংশোধন করে ‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ জারি করা হয়েছে।
- অধ্যাদেশটি ২৫ মে, রবিবার সন্ধ্যায় জারি করা হয়, যা পূর্বে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ অনুমোদন করেছিল।
- সরকারি কর্মচারীদের ৪টি কাজকে (যেমন: অনানুগত্য, বিনা অনুমতিতে অনুপস্থিতি, অন্যদের কর্তব্য পালনে বাধা দেওয়া বা উসকানি) অসদাচরণ গণ্য করে অপরাধের আওতায় আনা হয়েছে।
- এসব অপরাধের শাস্তি হিসেবে নিম্নপদে অবনমন, চাকরি থেকে অপসারণ বা বরখাস্তের মতো দণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে।
সরকারি চাকরিতে শৃঙ্খলা ও দায়বদ্ধতা বাড়াতে সরকার ‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ জারি করেছে। রবিবার (২৫ মে) সন্ধ্যায় এই অধ্যাদেশ জারি করা হয়, যা এর আগে গত বৃহস্পতিবার অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে খসড়া হিসেবে অনুমোদিত হয়েছিল। এই অধ্যাদেশের মাধ্যমে সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮-এর কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনা হয়েছে।
নতুন অধ্যাদেশ অনুযায়ী, সরকারি কর্মচারীদের চারটি নির্দিষ্ট কাজকে অসদাচরণ হিসেবে গণ্য করে অপরাধের আওতায় আনা হয়েছে। প্রথমত, কোনো সরকারি কর্মচারী যদি এমন কোনো কাজে লিপ্ত হন যা অনানুগত্যের শামিল, বা যা অন্য কোনো সরকারি কর্মচারীর মধ্যে অনানুগত্য সৃষ্টি করে, শৃঙ্খলা বিঘ্নিত করে অথবা কর্তব্য সম্পাদনে বাধার সৃষ্টি করে। দ্বিতীয়ত, অন্যান্য কর্মচারীর সাথে সমবেতভাবে বা এককভাবে ছুটি ছাড়া অথবা কোনো যুক্তিসংগত কারণ ছাড়া নিজ কর্ম থেকে অনুপস্থিত থাকা, বিরত থাকা বা কর্তব্য সম্পাদনে ব্যর্থ হওয়া। তৃতীয়ত, অন্য কোনো কর্মচারীকে তার কর্ম থেকে অনুপস্থিত থাকতে, বিরত থাকতে বা তার কর্তব্য পালন না করার জন্য উসকানি দেওয়া বা প্ররোচিত করা। এবং চতুর্থত, যেকোনো সরকারি কর্মচারীকে তার কর্মে উপস্থিত হতে বা কর্তব্য সম্পাদনে বাধাগ্রস্ত করা।
এই ধরনের অপরাধ প্রমাণিত হলে দোষী কর্মচারীর বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার বিধান রাখা হয়েছে। শাস্তির মধ্যে রয়েছে নিম্নপদ বা নিম্নবেতন গ্রেডে অবনমিতকরণ, চাকরি থেকে অপসারণ অথবা চাকরি থেকে বরখাস্ত করা।
অধ্যাদেশে অভিযোগ নিষ্পত্তি ও শাস্তির প্রক্রিয়াও নির্দিষ্ট করা হয়েছে। কোনো কর্মচারীর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের সাত দিনের মধ্যে তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হবে। অভিযুক্ত দোষী সাব্যস্ত হলে, কেন তার ওপর দণ্ড আরোপ করা হবে না, সে বিষয়ে আরও সাত কর্মদিবসের মধ্যে পুনরায় কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হবে। এই প্রক্রিয়ার ভিত্তিতেই দণ্ড আরোপ করা যাবে। দণ্ডপ্রাপ্ত কর্মচারী ৩০ কর্মদিবসের মধ্যে সেই আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করার সুযোগ পাবেন। তবে, রাষ্ট্রপতি কর্তৃক প্রদত্ত কোনো আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করা যাবে না, যদিও সংশ্লিষ্ট কর্মচারী রাষ্ট্রপতির কাছে ওই আদেশ পুনর্বিবেচনার জন্য আবেদন করতে পারবেন