পরিবেশ দূষণ আজ এক বিশ্বব্যাপী সংকটে পরিণত হয়েছে এবং বাংলাদেশও এর ভয়াল থাবা থেকে মুক্ত নয়। বায়ু দূষণ, পানি দূষণ, শব্দ দূষণ, প্লাস্টিক দূষণসহ নানা প্রকার দূষণে আমাদের চারপাশের পরিবেশ ক্রমেই বসবাসের অযোগ্য হয়ে উঠছে। শিল্পকারখানার বর্জ্য, যানবাহনের কালো ধোঁয়া, নির্বিচারে বৃক্ষ নিধন এবং পলিথিনের যথেচ্ছ ব্যবহার এই দূষণকে আরও তীব্র করে তুলেছে। এর প্রত্যক্ষ ফলস্বরূপ মানুষের স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ছে, জীববৈচিত্র্য হুমকির মুখে পড়ছে এবং প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছ
পরিবেশবিদ ও সচেতন নাগরিক সমাজের প্রতিক্রিয়া উদ্বেগজনক। তারা বারবার এই ভয়াবহ পরিণতির বিষয়ে সতর্ক করছেন। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই ব্যক্তিগত বা গোষ্ঠীগত মুনাফার লোভে পরিবেশের সুরক্ষার বিষয়টি উপেক্ষিত হচ্ছে। সাধারণ মানুষের মধ্যেও এ বিষয়ে সচেতনতার অভাব পরিলক্ষিত হয়। অনেকেই বুঝতে পারছেন না যে, আজকের এই অবহেলা আগামী প্রজন্মের জন্য এক ভয়ঙ্কর ভবিষ্যৎ তৈরি করছে। বিশুদ্ধ বাতাস, নিরাপদ পানি এবং সুস্থ পরিবেশ তাদের মৌলিক অধিকার, যা আজ আমাদের কর্মকাণ্ডের কারণে কেড়ে নেওয়া হচ্ছে।
এই সংকট মোকাবিলায় জরুরি ভিত্তিতে সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণ অপরিহার্য। সরকারকে কঠোর আইন প্রণয়ন ও তার যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। দূষণকারী শিল্পকারখানার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া, নবায়নযোগ্য শক্তির ব্যবহার বৃদ্ধি, ব্যাপক হারে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি এবং প্লাস্টিক ও পলিথিনের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে কার্যকরী ভূমিকা পালন করতে হবে। পাশাপাশি, গণসচেতনতা বৃদ্ধির জন্য ব্যাপক প্রচারণা চালানো প্রয়োজন।
প্রতিটি নাগরিককে তার নিজ নিজ অবস্থান থেকে পরিবেশ সুরক্ষায় এগিয়ে আসতে হবে। মনে রাখতে হবে, এই পৃথিবী আমাদের এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য বাসযোগ্য রাখার দায়িত্ব আমাদের সকলের। এখনই সময়, সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এই আসন্ন বিপদ থেকে নিজেদের এবং পৃথিবীকে রক্ষা করার।