বর্তমান যুগ তথ্যপ্রযুক্তির যুগ, আর এই যুগের তরুণ প্রজন্মের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে সোশ্যাল মিডিয়া।
ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, টুইটার, টিকটকের মতো প্ল্যাটফর্মগুলো তাদের দৈনন্দিন যোগাযোগের মাধ্যম, বিনোদনের খোরাক এবং তথ্য আদান-প্রদানের অন্যতম ক্ষেত্র। এর মাধ্যমে তরুণরা বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষের সাথে যুক্ত হতে পারছে, নতুন কিছু শিখছে এবং নিজেদের সৃজনশীলতা প্রকাশের সুযোগ পাচ্ছে। অনেক তরুণ সোশ্যাল মিডিয়াকে ব্যবহার করে সামাজিক সচেতনতামূলক কাজেও অংশ নিচ্ছে।
তবে, মুদ্রার অপর পিঠের মতো সোশ্যাল মিডিয়ার নেতিবাচক দিকগুলোও উপেক্ষা করার মতো নয়। এর অতি ব্যবহারে তরুণদের মধ্যে আসক্তি বাড়ছে, যা তাদের পড়াশোনা ও মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলছে। সাইবার বুলিং, ফেক নিউজ, ব্যক্তিগত তথ্যের অপব্যবহার এবং বাস্তব জীবনের সামাজিক যোগাযোগের ঘাটতি উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
অনেক তরুণ বাস্তব জগৎ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে ভার্চুয়াল জগতে বুঁদ হয়ে থাকছে, যা তাদের মধ্যে একাকিত্ব ও হতাশা সৃষ্টি করছে। অভিভাবকদের প্রতিক্রিয়া মিশ্র; কেউ কেউ প্রযুক্তির সুবিধা নিয়ে আশাবাদী, আবার অনেকেই সন্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত।
এই পরিস্থিতিতে, সোশ্যাল মিডিয়ার সুষম ব্যবহার নিশ্চিত করা প্রয়োজন। তরুণ প্রজন্মকে এর ইতিবাচক দিকগুলো গ্রহণ এবং নেতিবাচক দিকগুলো বর্জন করার শিক্ষা দিতে হবে। পরিবার ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। ডিজিটাল লিটারেসি বা প্রযুক্তিজ্ঞান বৃদ্ধি এবং সাইবার নিরাপত্তা সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করা জরুরি।
তরুণদের বুঝতে হবে, সোশ্যাল মিডিয়া জীবনের অংশমাত্র, পুরো জীবন নয়। এর সঠিক ও নিয়ন্ত্রিত ব্যবহারই পারে এটিকে সত্যিকার অর্থে আশীর্বাদে পরিণত করতে, অন্যথায় এটি অভিশাপ হয়ে দেখা দিতে সময় নেবে না। আত্মনিয়ন্ত্রণ এবং সচেতনতাই এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার প্রধান উপায়।