অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও উন্নয়ন সংস্থা (ওইসিডি) মঙ্গলবার জানিয়েছে যে বিশ্বব্যাপী মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি ২০২৪ সালের ৩.৩ শতাংশ থেকে কমে এই বছর এবং আগামী বছর ২.৯ শতাংশে নেমে আসবে বলে অনুমান করা হচ্ছে।
তাদের সর্বশেষ অর্থনৈতিক আউটলুক প্রতিবেদনে, ওইসিডি বিশ্বব্যাপী প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস সংশোধন করে কমিয়েছে। এর কারণ হিসেবে সংস্থাটি একটি প্রযুক্তিগত অনুমানের কথা উল্লেখ করেছে, যেখানে ধরে নেওয়া হয়েছে যে চলমান আইনি বিরোধ সত্ত্বেও মধ্য-মে পর্যন্ত বিদ্যমান শুল্ক হার অপরিবর্তিত থাকবে।
সংস্থাটি সতর্ক করে দিয়েছে যে যদি বর্তমান প্রবণতাগুলি – যেমন ক্রমবর্ধমান বাণিজ্য বাধা, কঠোর আর্থিক পরিস্থিতি, ব্যবসা ও ভোক্তা আস্থার দুর্বলতা এবং নীতিগত অনিশ্চয়তা বৃদ্ধি – অব্যাহত থাকে, তবে তা বিশ্বব্যাপী প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনাকে উল্লেখযোগ্যভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।
এই পূর্বাভাস বিশ্ব অর্থনীতির জন্য একটি সতর্কবার্তা, যা বিভিন্ন ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা, মুদ্রাস্ফীতির চাপ এবং সরবরাহ শৃঙ্খলে বাধার মতো একাধিক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। ওইসিডি’র মতে, বাণিজ্য বাধাগুলি আন্তর্জাতিক বাণিজ্য এবং বিনিয়োগকে সংকুচিত করতে পারে, যা অর্থনৈতিক কার্যকলাপকে আরও মন্থর করে দেবে।
পাশাপাশি, কঠোর আর্থিক পরিস্থিতি ঋণ গ্রহণকে আরও ব্যয়বহুল করে তুলবে, যা ব্যবসা এবং ব্যক্তিদের বিনিয়োগ ও ব্যয়ের ক্ষমতাকে সীমিত করবে। ভোক্তা ও ব্যবসার আস্থা কমে গেলে তা অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের গতিকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে, কারণ মানুষ এবং সংস্থাগুলি ব্যয় এবং বিনিয়োগের ক্ষেত্রে আরও সতর্ক হয়ে উঠবে।
নীতিগত অনিশ্চয়তা, বিশেষ করে প্রধান অর্থনীতিগুলির মধ্যে, বিনিয়োগের সিদ্ধান্তগুলিকে বিলম্বিত করতে পারে এবং অর্থনৈতিক অস্থিরতা বাড়াতে পারে। এই সমস্ত কারণগুলি সম্মিলিতভাবে বিশ্ব অর্থনীতির প্রবৃদ্ধিকে নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত করতে পারে বলে ওইসিডি আশঙ্কা প্রকাশ করেছে।
সংস্থাটি নীতিনির্ধারকদের বাণিজ্য উত্তেজনা কমাতে, আর্থিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে এবং কাঠামোগত সংস্কারের মাধ্যমে প্রবৃদ্ধি সহায়ক পরিবেশ তৈরি করার জন্য সমন্বিত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। এই চ্যালেঞ্জগুলি মোকাবিলা করতে না পারলে বিশ্ব অর্থনীতি একটি দীর্ঘমেয়াদী মন্থর প্রবৃদ্ধির চক্রে প্রবেশ করতে পারে বলে ওইসিডি মনে করছে।