ইসরায়েলের ওপর হামলা প্রতিহত করতে সাহায্য করলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এবং ফ্রান্সের আঞ্চলিক ঘাঁটি ও জাহাজগুলিকে লক্ষ্যবস্তু করা হবে বলে ইরান হুঁশিয়ারি দিয়েছে। ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম এই খবর জানিয়েছে।
ইরানের সরকারি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “ইসরায়েলের ওপর ইরানের হামলা প্রতিহত করার ক্ষেত্রে অংশগ্রহণকারী যেকোনো দেশ ষড়যন্ত্রকারী সরকারের সমস্ত আঞ্চলিক ঘাঁটি, যার মধ্যে পারস্য উপসাগরীয় দেশগুলোর সামরিক ঘাঁটি এবং পারস্য উপসাগর ও লোহিত সাগরে থাকা জাহাজ ও নৌযানগুলিও ইরানের বাহিনীর লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হবে।”
এর আগে, ইরানের পারমাণবিক ও সামরিক স্থাপনায় ব্যাপক হামলার একদিন পর ইরান ইসরায়েলের ওপর ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। ইরানের একজন সরকারি মুখপাত্র ফাতেমেহ মোহাজেরানি বলেছেন, রাতের বেলা ইরানের চালানো হামলার পর ইসরায়েলকে শাস্তি দেওয়া “আমাদের জাতীয় গর্ব পুনরুদ্ধার এবং আমাদের জনগণের ন্যায্য অধিকার পুনরুদ্ধারের জন্য অপরিহার্য” ছিল। তিনি মেহের নিউজ এজেন্সিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, “জায়নবাদী শাসনের সন্ত্রাসী ও নৃশংস কর্মকাণ্ডের জবাবে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন ছিল।” তিনি আরও বলেন, “প্রয়োজনে এই ধরনের পদক্ষেপ অব্যাহত থাকবে।”
অন্যদিকে, আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (আইএইএ) জানিয়েছে, ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় ইসরায়েলি হামলার পর এর বাইরের অংশে তেজস্ক্রিয়তার মাত্রায় কোনো বৃদ্ধি ঘটেনি। জাতিসংঘের এই পরমাণু পর্যবেক্ষণ সংস্থা এক্স-এ (পূর্বে টুইটার) এক পোস্টে বলেছে, “১৩ জুন ইসফাহান পারমাণবিক স্থাপনাকে বেশ কয়েকবার লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছিল।”
এই পাল্টাপাল্টি হামলা এবং হুমকির ঘটনা মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। ইরানের এই হুঁশিয়ারি পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। এই অঞ্চলে কোনো একটি পক্ষের ভুল পদক্ষেপ বা অতিরিক্ত প্রতিক্রিয়া একটি বড় ধরনের সংঘাতের দিকে নিয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। আন্তর্জাতিক মহল উভয় পক্ষকে সংযম প্রদর্শনের এবং উত্তেজনা প্রশমনের জন্য কূটনৈতিক সমাধানের পথ খোঁজার আহ্বান জানাচ্ছে। এই মুহূর্তে পুরো বিশ্বের নজর মধ্যপ্রাচ্যের এই ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার দিকে, এবং যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে সব পক্ষকে দায়িত্বশীল আচরণ করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।