আজকের দ্রুতগতির যান্ত্রিক জীবনে মানসিক চাপ একটি অতি সাধারণ সমস্যা। ছাত্রছাত্রী থেকে শুরু করে কর্মজীবী মানুষ, এমনকি গৃহিণীরাও প্রায়শই নানা ধরনের মানসিক চাপের শিকার হন। এই চাপ দীর্ঘস্থায়ী হলে শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। তবে কিছু সহজ কৌশল অবলম্বন করে দৈনন্দিন জীবনের চাপ অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।
প্রথমত, নিয়মিত শরীরচর্চা মানসিক চাপ কমাতে অত্যন্ত কার্যকর। প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট হাঁটা, দৌড়ানো, যোগব্যায়াম বা যেকোনো পছন্দের শারীরিক কার্যকলাপে লিপ্ত থাকলে মস্তিষ্কে ‘এন্ডোরফিন’ নামক সুখী হরমোনের নিঃসরণ বাড়ে, যা মনকে সতেজ করে তোলে। দ্বিতীয়ত, পর্যাপ্ত ঘুম অপরিহার্য। প্রতি রাতে ৭-৮ ঘণ্টা নিরবচ্ছিন্ন ঘুম শরীর ও মনকে পুনরুজ্জীবিত করে, চাপের মোকাবিলা করার শক্তি জোগায়।
তৃতীয়ত, স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুলুন। প্রচুর পরিমাণে ফল, শাকসবজি ও শস্যজাতীয় খাবার খান। ক্যাফেইন, চিনি ও প্রক্রিয়াজাত খাবার এড়িয়ে চলুন, কারণ এগুলো উদ্বেগ বাড়াতে পারে। চতুর্থত, গভীর শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম করুন। চাপের মুহূর্তে কয়েকবার ধীরে ধীরে গভীর শ্বাস নিলে তাৎক্ষণিকভাবে মানসিক প্রশান্তি পাওয়া যায়। পঞ্চমত, নিজের জন্য কিছুটা সময় বের করুন। পছন্দের গান শোনা, বই পড়া, বাগান করা বা অন্য কোনো শখের কাজে মনোনিবেশ করলে মানসিক চাপ কমে।
সবশেষে, সামাজিক যোগাযোগ বজায় রাখুন। পরিবার ও বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটান, তাদের সঙ্গে নিজের অনুভূতি ভাগ করে নিন। প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে দ্বিধা করবেন না। মনে রাখবেন, মানসিক চাপ জীবনের অংশ হলেও, একে নিয়ন্ত্রণ করার উপায় আপনার হাতেই। এই ছোট ছোট অভ্যাসগুলো রপ্ত করতে পারলে জীবন অনেকটাই সহজ ও চাপমুক্ত হয়ে উঠবে।