কর্মব্যস্ত জীবনে আমরা অনেক সময়ই ঘুমকে অবহেলা করি। কিন্তু শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য পর্যাপ্ত ঘুম অপরিহার্য। ঘুম আমাদের শরীরকে মেরামত করে, স্মৃতিশক্তিকে গুছিয়ে তোলে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। পর্যাপ্ত ঘুমের অভাবে আমাদের মনোযোগ কমে যায়, মেজাজ খিটখিটে হয়ে ওঠে এবং দীর্ঘমেয়াদে বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দিতে পারে।
একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের প্রতিদিন গড়ে ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমের প্রয়োজন। এই ঘুম গভীর ও নিরবচ্ছিন্ন হওয়া উচিত। ভালো ঘুমের জন্য কিছু নিয়ম মেনে চলা জরুরি। প্রথমত, একটি নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমাতে যাওয়া এবং ঘুম থেকে ওঠার অভ্যাস তৈরি করুন, এমনকি ছুটির দিনেও। এটি আপনার শরীরের জৈবিক ঘড়িকে ঠিক রাখতে সাহায্য করবে। দ্বিতীয়ত, ঘুমের আগে চা, কফি বা অন্য কোনো উত্তেজক পানীয় গ্রহণ থেকে বিরত থাকুন। নিকোটিন ও অ্যালকোহলও ঘুমের ব্যাঘাত ঘটায়।
তৃতীয়ত, শোবার ঘরটিকে ঘুমের উপযোগী করে তুলুন। ঘরটি অন্ধকার, শান্ত ও আরামদায়ক তাপমাত্রায় রাখুন। ঘুমের অন্তত এক ঘণ্টা আগে মোবাইল, ল্যাপটপ বা টিভির স্ক্রিন থেকে দূরে থাকুন, কারণ এগুলোর নীল আলো মেলাটোনিন নামক ঘুম হরমোনের নিঃসরণ কমিয়ে দেয়। চতুর্থত, দিনের বেলায় হালকা ব্যায়াম করুন, তবে ঘুমানোর ঠিক আগে ভারী ব্যায়াম এড়িয়ে চলুন।
পঞ্চমত, রাতের খাবার ঘুমানোর অন্তত দুই থেকে তিন ঘণ্টা আগে সেরে ফেলুন। ভরপেট খেয়ে সঙ্গে সঙ্গে শুয়ে পড়লে হজমের সমস্যা হতে পারে এবং ঘুমের ব্যাঘাত ঘটতে পারে। যদি ঘুমাতে সমস্যা হয়, তাহলে হালকা গরম দুধ পান করতে পারেন অথবা আরামদায়ক কোনো বই পড়তে পারেন।
দুশ্চিন্তা বা মানসিক চাপ থাকলে তা লিখে ফেলার চেষ্টা করুন, এতে মন হালকা হবে। পর্যাপ্ত ও মানসম্পন্ন ঘুম একটি সুস্থ ও কর্মঠ জীবনের চাবিকাঠি। তাই ঘুমকে অবহেলা না করে এর প্রতি যত্নবান হোন।