বর্তমান প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে আমরা প্রত্যেকেই কমবেশি ব্যস্ত। অফিস, ব্যবসা, পড়াশোনা – নানা কারণে আমাদের দিনের বেশিরভাগ সময়ই পরিবারের বাইরে কাটাতে হয়। কিন্তু এই ব্যস্ততার অজুহাতে পরিবারের সঙ্গে গুণগত সময় কাটানো থেকে বিরত থাকা উচিত নয়। কারণ, একটি সুখী ও সুস্থ জীবনের জন্য পারিবারিক বন্ধন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
গুণগত সময় কাটানো মানে শুধু একই ছাদের নিচে থাকা নয়, বরং পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে আন্তরিকভাবে যোগাযোগ স্থাপন করা, একে অপরের প্রতি মনোযোগ দেওয়া এবং একসঙ্গে আনন্দময় মুহূর্ত তৈরি করা। এর ফলে পারিবারিক বন্ধন দৃঢ় হয়, একে অপরের প্রতি বিশ্বাস ও বোঝাপড়া বাড়ে। শিশুদের মানসিক বিকাশে এবং তাদের মধ্যে নিরাপত্তা বোধ তৈরিতে পরিবারের সঙ্গে কাটানো সুন্দর সময়গুলোর ভূমিকা অপরিসীম। তারা পরিবারের কাছ থেকেই জীবনের প্রাথমিক শিক্ষা ও মূল্যবোধ অর্জন করে।
ব্যস্ততার মাঝেও পরিবারের জন্য সময় বের করার কিছু উপায় রয়েছে। প্রথমত, প্রতিদিন অন্তত একবেলা একসঙ্গে খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন। খাওয়ার টেবিলে দিনের বিভিন্ন ঘটনা ও অনুভূতি নিয়ে আলোচনা করতে পারেন। দ্বিতীয়ত, সপ্তাহের একটি নির্দিষ্ট দিন বা ছুটির দিনে পরিবারের সবাই মিলে কোথাও বেড়াতে যাওয়া, সিনেমা দেখা বা ঘরে বসে কোনো মজার খেলাধুলার আয়োজন করতে পারেন। তৃতীয়ত, শিশুদের পড়াশোনায় সাহায্য করা, তাদের সঙ্গে খেলাধুলা করা বা তাদের পছন্দের কোনো কাজে সঙ্গ দেওয়াটাও গুণগত সময় কাটানোর অংশ।
প্রযুক্তির অতিরিক্ত ব্যবহার অনেক সময় পারিবারিক সম্পর্কে দূরত্ব তৈরি করে। তাই, পরিবারের সঙ্গে থাকাকালীন মোবাইল ফোন বা অন্যান্য গ্যাজেট ব্যবহার সীমিত করুন। একে অপরের কথা মনোযোগ দিয়ে শুনুন এবং সম্মান প্রদর্শন করুন। ছোট ছোট বিষয়ে প্রশংসা করা বা ধন্যবাদ জানানো সম্পর্কের মাধুর্য বাড়ায়। মনে রাখবেন, অর্থ বা সাফল্য কখনোই পারিবারিক সুখের বিকল্প হতে পারে না। পরিবারের সঙ্গে কাটানো প্রতিটি মুহূর্তই মূল্যবান। এই বন্ধনই আমাদের জীবনের কঠিন সময়ে শক্তি জোগায় এবং আনন্দের মুহূর্তে পূর্ণতা দেয়।