এই মাসে ইসরায়েল এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যখন ইরানে হামলা চালায়, তখন অনেকেই ইরানের শক্তিশালী মিত্র চীন ও রাশিয়ার প্রতিক্রিয়ার দিকে তাকিয়ে ছিল। কিন্তু জোরালো নিন্দা বা সামরিক সহায়তার পরিবর্তে বেইজিং এবং মস্কোর সংযত প্রতিক্রিয়া তাদের তথাকথিত আমেরিকা-বিরোধী জোটের আসল দুর্বলতা প্রকাশ করে দিয়েছে।
ইরানের পাশে দাঁড়ানোর পরিবর্তে চীন অত্যন্ত সতর্ক বার্তা দিয়েছে। চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই দোষারোপের বদলে কূটনীতির ওপর জোর দেন এবং প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং উত্তেজনা কমানোর আহ্বান জানান। এমনকি হরমুজ প্রণালী বন্ধ করার বিরুদ্ধে ইরানকে প্রচ্ছন্ন সতর্কবার্তা দিয়ে বেইজিং বলেছে যে, এটি বিশ্ব বাণিজ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
এই অবস্থান একটি সহজ সত্যকে সামনে আনে: মধ্যপ্রাচ্যে ঝুঁকিপূর্ণ সংঘাতের চেয়ে চীন নিজের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং পশ্চিমা বিশ্বের সাথে বিশাল বাণিজ্য সম্পর্ককে বেশি গুরুত্ব দেয়।
এই ঘটনা প্রমাণ করে যে চীন, রাশিয়া এবং ইরানের জোটটি আদর্শের চেয়ে সুবিধার ওপর ভিত্তি করে তৈরি। এই অংশীদারিত্বগুলো অত্যন্ত অসম। ইরান ও রাশিয়া অর্থনৈতিকভাবে চীনের ওপর যতটা নির্ভরশীল, চীন তাদের ওপর ততটা নয়। চীনের অর্থনীতি উভয়ের চেয়ে বহুগুণ বড় এবং তার স্বার্থ বিশ্বজুড়ে।
পশ্চিমা বিশ্বের জন্য এটি একটি সতর্ক আশাবাদের কারণ। এটি ইঙ্গিত দেয় যে রাশিয়া ও চীনের বহুচর্চিত ‘সীমাহীন’ বন্ধুত্বও অটুট নয়। বেইজিং তার মিত্রদের ব্যবহার করে আমেরিকাকে চ্যালেঞ্জ জানাবে ঠিকই, কিন্তু যদি তাতে নিজের অর্থনৈতিক স্বার্থ বিপন্ন হয়, তবে তাদের রক্ষা করতে এগিয়ে আসবে না।